মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার পর জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এটিএম আজহারের মুক্তির বিষয়টি ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় অনুযায়ী কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর নিয়ম অনুসরণ করেই তার মুক্তি কার্যকর করা হয়।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার রায় কারাগারে পৌঁছালে মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
রায়ের পটভূমি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন।
আপিল শুনানি শেষে, ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এরপর ২০২০ সালের ১৯ জুলাই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রিভিউ শুনানি গ্রহণ করে পুনরায় আপিলের অনুমতি দেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় প্রথমবারের মতো নজির স্থাপন করে।
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৭ মে) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজহারুল ইসলামকে সকল অভিযোগ থেকে খালাস দেন।
প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব এই রায় এবং মুক্তির ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও বিচারিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত একজন ব্যক্তির খালাস প্রাপ্তি এবং তা থেকে মুক্তি পাওয়া একটি জটিল ও নজিরবিহীন আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকবে।