ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পৃথক বার্তা দিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, “প্রত্যেক শহীদের রক্তের বদলে শত শত মানুষ সেই পতাকা বহন করবে। ইরান আগ্রাসী নয়, কিন্তু প্রতিরক্ষায় কখনও পিছপা হবে না। আমাদের সবাইকে হাতে-হাত রেখে এই হামলার জবাব দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান থেকে এক চুলও সরবো না। আমাদের জনগণের ন্যায়ের দাবি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অধিকার। আজ ইরান একটি ন্যায়সঙ্গত লড়াইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে।”
অন্যদিকে, তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই হামেনেহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, “এখন আর কূটনৈতিক বিবৃতি দিয়ে চলবে না, সময় এসেছে কার্যকর পদক্ষেপের। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অবিলম্বে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক বসতবাড়ি ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এটা শুধু আন্তর্জাতিক আইন নয়, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইহুদিবাদী শক্তি আমাদের বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে, ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরে ঢুকে নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিয়েছে।”
ইসমাইল বাঘাই আরও বলেন, “শিকার ও শিকারিকে এক কাতারে ফেলা যাবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিমুখী নীতি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। যারা নীরবতা পালন করছে, তারা এ আগ্রাসনের পরোক্ষ সমর্থক।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের ভাষণ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে ইরান এখন পুরোপুরি প্রতিরোধ মনোভাব গ্রহণ করেছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা ও তার জবাব নিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
আল–জাজিরার বরাতে জানা যায়, এই পরিস্থিতিতে তেহরান আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপে নয়, বরং জনগণকে নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে জোর দিচ্ছে।