প্রকৃতির ভাষা কি কেবল দৃশ্যমান রঙ আর গন্ধ? ইসরায়েলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন—না, বরং উদ্ভিদ শব্দে কথা বলে, আর সেই অদৃশ্য বার্তা পোকামাকড় শুনে প্রতিক্রিয়া জানায়।
গবেষণার পটভূমি
সম্মানিত বিজ্ঞানী রিয়া সেল্টজার ও গাই জের এসেল গবেষণা পরিচালনা করেন অধ্যাপক ইয়োসি ইয়োভেল ও লিলাচ হাদানি‘র তত্ত্বাবধানে। গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে eLife জার্নালে।
তাদের ভাষায়, “আমরা উদ্ভিদ ও পোকামাকড়ের মধ্যে শব্দভিত্তিক যোগাযোগের প্রথম প্রমাণ উন্মোচন করেছি।”
শব্দের চরিত্র: শোনা যায় না, কিন্তু হয় যোগাযোগ
- উদ্ভিদ যখন চাপগ্রস্ত বা শুকিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা আল্ট্রাসনিক শব্দ নির্গত করে।
- এই শব্দ মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে, কিন্তু পোকামাকড় ও বাদুড় শুনতে সক্ষম।
- বিশেষ করে নারী মথ এই সংকেত বুঝে ডিম পাড়ার স্থান নির্বাচন করে।
পরীক্ষার অভিজ্ঞতা
গবেষকরা দুইটি সুস্থ টমেটো গাছের সামনে মথ উপস্থাপন করেন:
- একটি গাছের পাশে বাজানো হয় শুকনো গাছের শব্দ
- অন্যটি থাকে নীরব
ফলাফল? মথরা নীরব গাছকে পছন্দ করে, অর্থাৎ তারা শব্দ শুনে সিদ্ধান্ত নেয়—যেখানে শব্দ নেই, সেখানে নিরাপত্তা আছে।
কৃষির ভবিষ্যৎ: শব্দে ফসল রক্ষা!
এই আবিষ্কার শুধু বৈজ্ঞানিক নয়—কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে:
- ফসলের স্বাস্থ্য শনাক্তে আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
- কীটনিয়ন্ত্রণে শব্দভিত্তিক কৌশল
- টিকসই কৃষি ব্যবস্থাপনায় উদ্ভিদের ‘শব্দ’ হবে নতুন অস্ত্র
নতুন প্রশ্ন, নতুন দিগন্ত
অধ্যাপক হাদানি বলেন, “আমরা মনে করি এটি কেবল শুরু। আরও প্রাণী হয়তো উদ্ভিদের শব্দে প্রতিক্রিয়া জানায়।”
এই প্রশ্ন আমাদের ভাবতে বাধ্য করে—প্রকৃতি কি আমাদের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল? আর শব্দ কি তার নীরব বিপ্লবের ভাষা?