বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিদের চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির রায়হানের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে এবং ঠিক কোথায় ঘটনা ঘটেছে তা পরিষ্কার নয়। চনপাড়ার আশপাশেই ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চনপাড়া এলাকায় অনেক মাদক স্পট থাকলেও নেশাজাতীয় দ্রব্যের সঙ্গে ফারদিনের কোনো সংশ্লিষ্টতা এখনো পাওয়া যায়নি। তার মাদকসংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে যারা ফারদিনকে হত্যা করেছে তারা মাদক ব্যবসায়ী। ঘাতকরা অন্য অপরাধের সঙ্গেও জড়িত। হত্যার কারণ উন্মোচনের জন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। রায়হান বা তার গ্রুপের কাউকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন যুগান্তরকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এবং মেন্যুয়াল তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমাদের কাছে মনে হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ড চনপাড়া বস্তির রায়হানের নেতৃত্বে ঘটেছে। ঘটনাস্থলে তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। রায়হানসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, ঘটনার রাতে ফারদিন চনপাড়া বস্তিতে গিয়েছিলেন কিনা তা আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা বস্তির আশপাশে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকে। পুলিশের ওপর হামলার ৩-৪টি মামলাসহ রায়হানের নামে ১০-১২টি মামলা আছে। বস্তির সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় বজলু মেম্বার। তার আশ্রয়ে রায়হানসহ অন্যরা মাদক ব্যবসা করে। সেখানে মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর ফারদিন নিখোঁজ হন। ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা বাদী হয়ে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় বুশরাকে গ্রেফতারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ছিল রিমান্ডের শেষ দিন। আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, রিমান্ডে থাকা বুশরার কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য মেলেনি। তাই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ এখন নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। বিভিন্ন স্থানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযান চলছে।
ফারদিনের বাবা নূরউদ্দিন রানা যুগান্তরকে বলেন, মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। তদন্তসংশ্লিষ্ট কেউই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। এ কারণে একটু ধৈর্য ধারণ করছি।