রাজধানী ঢাকার অপরাধ জগৎ আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে জামিনে মুক্ত হওয়া একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসীর ইন্ধনে। কেউ অবস্থান করছে বিদেশে, আবার কেউ অজ্ঞাত স্থান থেকে রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালনা করছে চাঁদাবাজি, খুন, জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অপরাধীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটবে।
পুরনো আতঙ্কের নতুন রূপ এক সময় কালা জাহাঙ্গীর, সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হান্নান-এর মতো নাম শুনলেই রাজধানীজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তো। নানা অভিযানে অনেকেই ক্রসফায়ারে নিহত, কেউবা গ্রেপ্তার, বাকিরা বিদেশে পলায়ন করেছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে কিলার আব্বাস, সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলালসহ এক ডজনেরও বেশি শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম।
তারা আবারও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে ঢাকার অপরাধ জগতে—বিশেষ করে আধিপত্য বিস্তার, জমি দখল, চাঁদাবাজি, এমনকি হত্যাকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছে বলে গোয়েন্দা তথ্য বলছে।
অজ্ঞাত স্থান থেকে ‘রিমোট কন্ট্রোল’ অপরাধীচক্র তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামিনে মুক্ত অনেক সন্ত্রাসী ইতোমধ্যে দেশ ছাড়লেও, তারা এখনো অজ্ঞাত স্থান থেকে বা বিদেশ থেকে সরাসরি তাদের অপরাধীচক্রকে পরিচালনা করছে।
গোয়েন্দা তৎপরতা না থাকায় এবং অপরাধীদের আসল অবস্থান শনাক্ত না করতে পারায় ঢাকা শহরে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নজরদারি না বাড়ালে বিপদ এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল কাজী শরীফ উদ্দিন (অবঃ) বলেন, “শুধু শীর্ষ সন্ত্রাসী নয়, তাদের হয়ে যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে—তাদের ওপরও কড়া নজরদারি প্রয়োজন। নইলে তারা অপরাধের শিকড় আরও গভীরে প্রোথিত করবে।”
পুরনো তালিকায় নতুন সক্রিয়তা উল্লেখযোগ্য যে, ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেছিল ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা।
আজ দুই দশক পর সেই তালিকায় থাকা অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে, ঢাকার অপরাধ জগৎ আবারও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।