পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় ভারি বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৭ জন। ধ্বংস হয়েছে হাজারো ঘরবাড়ি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় নাইজার রাজ্যে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
শুক্রবার (৩০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, বুধবার রাতের টানা বৃষ্টির পর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৭-তে।
নাইজারের রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান ইব্রাহিম হুসেইনি বলেন, “আমাদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী দুটি অঞ্চলে প্রায় তিন হাজার ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে গেছে। এখনো বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।”
বারবার বন্যা: মূল কারণ কী?
নাইজেরিয়ায় প্রতিবছর এপ্রিল থেকে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়, আর এর সঙ্গেই দেখা দেয় নিয়মিত বন্যা। বিশ্লেষকদের মতে, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, খাল ও জলাশয়ের উপর ঘরবাড়ি নির্মাণ এবং নর্দমায় অপরিচ্ছন্নভাবে ময়লা ফেলা—এই সমস্যাগুলোর জন্যই দেশটি ঘন ঘন বন্যার মুখে পড়ে।
এর আগে নাইজেরিয়ান আবহাওয়া সংস্থা (নাইমেট) সতর্ক করেছিল, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেশের ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে অন্তত ১৫টি রাজ্যে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
গত বছরও ভয়াবহ ছিল পরিস্থিতি
২০২2 সালের বন্যায় নাইজেরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছিল ৬০০ জনের বেশি, বাস্তুচ্যুত হয়েছিল প্রায় ১৪ লাখ মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি। এর পরের বছর আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেয়—১২০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহীন হয়ে পড়ে।
চলমান বর্ষা মৌসুমে আরও বৃষ্টিপাত ও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।