• সারাদেশ

    পিরোজপুরে বনার্ঢ্য আয়োজনে দেশীয় ফল-পিঠা দিয়ে বর্ষবরণ

      প্রতিনিধি ১৫ এপ্রিল ২০২৫ , ৬:৪২:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    পিরোজপুরে বনার্ঢ্য আয়োজনে দেশীয় ফল-পিঠা দিয়ে বর্ষবরণ
    পিরোজপুরে বনার্ঢ্য আয়োজনে দেশীয় ফল-পিঠা দিয়ে বর্ষবরণ

    আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন

    হাসান মামুন, আঞ্চলিক প্রতিনিধি: পহেলা বৈশাখের সোনালী কিরণে জেগে ওঠা পিরোজপুর যেন আজ নতুন রঙে সেজেছে।উৎসবের আমেজ আর বর্ণিল আয়োজনের ঢেউ শহরজুড়ে আনন্দের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। অপরদিকে, শহরের টাউন ক্লাব মাঠে সেখানে আয়োজন করা হয়েছে মুখরোচক দেশীয় খাবারের সম্ভার, যা রসনাবিলাসীদের মন জয় করে নেবে।

    বর্ণিল আয়োজনে একশো এক ধরনের দেশীয় ফল-পিঠা দিয়ে বর্ষবরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে (১৪৩২ বঙ্গাব্দ) বরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে অদ্য ১৪ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ সকাল ১১:০০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা এবং পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
    এসময় জাতীয় সঙ্গীতের সুর আর “এসো হে বৈশাখ” গানের সম্মিলিত কণ্ঠধ্বনিতে নববর্ষের আগমনী বার্তা ঘোষিত হয়।

     

    এরপর এক বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাঠ প্রাঙ্গনে ফিরে আসে। এই শোভাযাত্রা যেন পিরোজপুরের মানুষের প্রাণের প্রতিচ্ছবি, যেখানে মিশেছিল আবালবৃদ্ধবনিতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের। এই মেলা শুধু একটি প্রাঙ্গণ নয়, বরং ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি, যেখানে লোকজ সংস্কৃতি আর বাংলার চিরায়ত রূপ রস আস্বাদন করার সুযোগ মিলবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

    অন্যদিকে, শহরের গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বন্ধু ফোরাম এর আয়োজনে এ উৎসব পালন করা হয়। বর্ষবরণে বাঙালি আপ্যায়ন নামে ব্যতিক্রমি এ আয়োজনে শিশু-কিশোর সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। ‎বর্ণিল এ বর্ষবরণে বাঙালি আপ্যায়ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লাল, সবুজ, কমলা ও হলুদসহ নানা রঙের পোশাকে সেজেছেন সবাই।

     

    পুরুষেরা পাঞ্জাবি, নারীরা শাড়ি মাথায় ফুলের মালা, হাতে রঙিন চুড়ি এবং শিশুদের মুখে উচ্ছ্বাস-সব মিলিয়ে ছিল প্রাণবন্ত পরিবেশ। ‎দেখা যায়, গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব মাঠ প্রাঙ্গণ ছিল উৎসবের রঙে রাঙানো। দুধকুলি, ক্ষীরকুলি, তিলকুলি, পাটিসাপটা, ফুলঝুড়ি, ধুপি পিঠা, নকশি পিঠা, মালাই পিঠা, মালপোয়া, পাকন পিঠা, ঝাল পিঠাসহ ২৫ ধরনের পিঠা, কয়েক জাতের কলা, আনারস, পেপে, পেচি গাব, ডুমুর ফল, কাঠাল, চালতা, আতা, সফেদা, বেতফল, টকফলসহ ৪৫ ধরনের ফল, চমচম, রসগোল্লা, রসমালাই, কালজামসহ ২০ ধরনের মিষ্টান্ন, বেলের রস, তালের রস, খেজুরের রস সহ ১১ ধরনের শরবতের পসেরা সাজিয়ে বসেছে আয়োজকরা। অতিথিরা হাতে মাটির বাসন নিয়ে তাদের পছন্দ সই খাবার বেছে নিচ্ছেন এবং নির্দিষ্ট আসনে বসে এসব ফল পিঠা মিষ্টান্ন খাচ্ছেন।

    ‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বন্ধু ফোরামের আহ্বায়ক এস এম ছাইদুল ইসলাম কিসমত বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদী বন্ধু ফোরামের সদস্যরা একটি ভিন্ন আঙ্গিকে এবছর বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছি। আমরা আপামর বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য ১০১ ধরনের বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার অতিথিদের আপ্যায়নের মাধ্যমে এ উৎসব পালন করেছি। প্রতিবছর আমরা এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করতে চাই আগামীতে আমরা আরো ব্যতিক্রমী আয়োজন করতে পারব বলে প্রত্যাশা করি। ‎জাতীয়তাবাদী বন্ধু ফোরাম এর আহ্বায়ক এস এম ছাইদুল ইসলাম কিসমত এর সভাপতিত্বে বর্ষবরণে বাঙালি আপ্যায়ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আলম খান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন।

    আরও খবর

    Sponsered content