• সারাদেশ

    পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের দুর্নীতির অভিযোগে ৫ কর্মকর্তা গ্রেফতার

      প্রতিনিধি ১৭ এপ্রিল ২০২৫ , ১১:৩৭:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের দুর্নীতির অভিযোগে ৫ কর্মকর্তা গ্রেফতার
    পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের দুর্নীতির অভিযোগে ৫ কর্মকর্তা গ্রেফতার

    আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন

    হাসান মামুন, আঞ্চলিক প্রতিনিধি:
    পিরোজপুরে এলজিইডি’র দুর্নীতিকান্ডে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের চার কর্মকর্তা ও এলজিইডি অফিসের এক কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে দুদক। বুধবার রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করে পিরোজপুর সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করলে আদালত শুনানী শেষে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।

     

    বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে জেলা দুদক কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংএ উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, তারা যাচাই বাছাই করে দেখতে পান ১৭ টি প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ পান।

     

    এর মধ্যে ৮টি প্রকল্পের ৮ প্রকল্পের ৪শত স্কীমের পিরোজপুর এলজিএডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক খান মনের মাধূরী মিশিয়ে বিভিন্ন প্রোজেক্ট তৈরী করে ১ হাজার ৭৩ কোটি টাকা, গ্রেফতারকৃত জেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে আত্মসাত করে। এর সাথে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ মহিউদ্দিন মহারাজ, তার ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম সহ তাদের অন্য ভাই ও স্ত্রীরাও সরাসরি জড়িত।

     

    তিনি বলেন, বর্তমানে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলা কালে আরও কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের কেও আসামী করা হবে। ৮টি মামলায়ই কমন আসামী আসামী আছেন পিরোজপুর এলজিএডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার, উপ সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক খান।

    গ্রেফতারকৃতরা হলেন-জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের জেলা এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোঃ মোহাসীন, এসএএস সুপার মোঃ মাসুম হাওলাদার, নজরুল ইসলাম, সাবেক ডিস্ট্রিক্ট এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোঃ আলমগীর হাসান ও পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা একেএম মোজাম্মেল হক খান।

     

    এছাড়া অন্যান্য আসামীরা হলেন, এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সত্তার হাওলাদার, আরিফুল ইসলাম সিনিয়র সরকারি প্রকৌশলী এলজিইডি, একেএম মোজাম্মেল হক খান, ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, ঠিকাদার মোঃ সামসুদ্দিন, ঠিকাদার মোঃ সালাউদ্দিন, এলজিইডির মোঃ আক্তার হোসেনসহ মোট ২৭ জন আসামী।

    সুত্র জানায়, প্রকল্প ভিত্তিক আত্মসাতকৃত টাকার পরিমান ২৭৭, ৫১, ৯৮ হাজার টাকা। আর এসব প্রকল্পগুলো হচ্ছে-অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ন পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, ঘূর্নিঝড় আম্ফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী সড়ক অবকাঠামো উন্নযন, জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন, উপজেলা শহর মাস্টারপ্লান প্রনয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন, গুরুত্বপূর্ন পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, পল্লী সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচী এবং দেশের দক্ষিনাঞ্চালে আয়রন ব্রীজ পূনবার্সন প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত ছিল। মঙ্গলবার পিরোজপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম ২৭ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্য থেকে বুধবার ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে পিরোজপুর এলজিইডি অফিস। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এলজিইডির প্রধান কার্যালয় থেকে বেশকটি তদন্ত টিম পিরোজপুর এলজিইডি অফিসে সীমাহীন দুর্নীতির প্রমান পান। কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বিল এসময় তাদেরকে পরিশোধ করা এবং এক হাজার ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ের গরমিল পায় তদন্ত কমিটি। সর্বশেষ, দুদক বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের প্রমান পেয়ে দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পিরোজপুর এলজিইডি অফিস ও জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজসেই সীমাহীন এ দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে দুদক উল্লেখ করেছে।

    আরও খবর

    Sponsered content