থাইল্যান্ডে চাঞ্চল্যকর এক কেলেঙ্কারিতে দেশজুড়ে তোলপাড়! থাই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এক নারীকে, যিনি ‘মিস গল্ফ’ নামে পরিচিত। অভিযোগ, তিনি অন্তত ৯ জন ভিক্ষুর সঙ্গে গোপন যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে সেইসব মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন। পরে সেই ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করে ভিক্ষুদের কাছ থেকে আদায় করতেন মোটা অঙ্কের অর্থ।
পুলিশের দাবি, গত তিন বছরে এই নারী ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আদায় করেছেন প্রায় ৩৮.৫ মিলিয়ন থাই বাত (প্রায় ১১ লাখ ডলার)! তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ৮০,০০০-এরও বেশি ছবি ও ভিডিও, যা ভিক্ষুদের ব্ল্যাকমেইল করতে ব্যবহৃত হতো।
এই ঘটনা থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে বিতর্কের মুখে ফেলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি ও মাদক পাচারের অভিযোগে এমনিতেই সমালোচনার ঝড় বইছে।
পুলিশ জানায়, জুন মাসে ব্যাংককের এক ভিক্ষু হঠাৎ সন্ন্যাস ত্যাগ করলে তদন্ত শুরু হয়। জানা যায়, ‘মিস গল্ফ’ ওই ভিক্ষুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এবং পরে দাবি করেন, তার সন্তান হয়েছে—এবং খোরপোষ হিসেবে দাবি করেন সাত মিলিয়ন বাত! পরে আরও কয়েকজন ভিক্ষুর কাছ থেকেও একইভাবে অর্থ আদায়ের তথ্য মেলে।
তদন্তে উঠে আসে, ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থের বড় অংশই তুলে নেওয়া হয়েছে এবং কিছু অর্থ অনলাইন জুয়ায় খরচ হয়েছে।
এখন ‘মিস গল্ফ’ চাঁদাবাজি, অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ গ্রহণসহ একাধিক ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। পুলিশ ভিক্ষুদের অপব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য হটলাইনও চালু করেছে।
এই কেলেঙ্কারির জেরে থাইল্যান্ডের সাঙ্গা সুপ্রিম কাউন্সিল ভিক্ষুদের আচরণবিধি আরও কঠোর করার উদ্যোগ নিয়েছে। গত বছরও গুরুতর অপরাধে দোষী ৮১ জন ভিক্ষুকে সন্ন্যাসচ্যুত করা হয়েছিল।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, শৃঙ্খলা রক্ষায় এবার আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।