মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা সাধারণ যাত্রী এবং পশু ব্যবসায়ী উভয়ের জন্যই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন পদক্ষেপ, যেমন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং নিরাপত্তা টহল বৃদ্ধি করা সত্ত্বেও এই অপরাধগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
বিভিন্ন রুটে ডাকাতির চিত্র:
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক: এই রুটের দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম এবং সোনারগাঁ অংশে ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়েছে। কাঁচপুর থেকে মেঘনা টোলপ্লাজা পর্যন্ত এলাকাটি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি দিনে-দুপুরেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
- ঢাকা-রাজশাহী-টাঙ্গাইল রুট: এই রুটে রাতের বেলায় চলাচলকারী যানবাহনে ডাকাতি এবং নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মতো ঘটনাও ঘটেছে। যানজটে আটকা পড়া বাসও ডাকাতের শিকার হচ্ছে।
- ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক: সাভারের ব্যাংক টাউন ও পুলিশ টাউন এলাকা যাত্রীদের জন্য আতঙ্কের কারণ। গত দুই মাসে এই রুটে পাঁচটি ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে দিনের বেলায় ডাকাতিও অন্তর্ভুক্ত।
- ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক: এই রুটের রায়পুরার মাহমুদাবাদ সেতু এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
পশু ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ:
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পশু ব্যবসায়ীরা তাদের পরিবহনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। অতীতে মহাসড়কে পশুবাহী ট্রাক ডাকাতি এবং জোর করে অন্য হাটে নামিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারা মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য ও পদক্ষেপ:
হাইওয়ে পুলিশ জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করেছে, তবে ঈদকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কথা জানিয়েছে। বরিশাল থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়েছে এবং সাভার এলাকায় নতুন চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যাত্রীবেশে ডাকাত ধরার জন্য বাসে তল্লাশি চালানোর কথাও বলা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা জানিয়েছেন, গত ঈদের মতো আসন্ন ঈদেও পশুবাহী পরিবহনের নিরাপত্তায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডাকাতি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে পুলিশ আগের মামলার আসামিদের জামিনে মুক্তি পাওয়া এবং তাদের পুনরায় সক্রিয় হওয়ার বিষয়টিকে উল্লেখ করেছে। মহাসড়কে ডাকাতির সাথে জড়িত ১৪০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং জেলা পুলিশকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
তবে বাস্তবতা হলো, এত পদক্ষেপের পরেও মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই থামানো যাচ্ছে না, যা যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।