বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, মানবিক করিডোর ও বন্দর ইস্যুতে তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে স্পষ্টভাবে ‘না’ বলেছেন।
রোববার (২৫ মে) কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে শ্রমিক ও পঞ্চায়েত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আমরা মানবিক করিডোর এবং বন্দর ইস্যুতে দ্ব্যর্থহীনভাবে ‘না’ বলেছি। একইসঙ্গে আমরা জানুয়ারির মাঝামাঝি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকলে এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন শেষ করার প্রস্তাব দিয়েছি।”
চা শ্রমিকদের উন্নয়নে সমতা দাবি, চা শ্রমিকদের মানবাধিকার, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারে যারা যান, তারা কি শ্রমিকদের ভোট নেন না? যদি নিয়ে থাকেন, তাহলে তাদেরও সমান সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। আমরা ক্ষমতায় গেলে শ্রমিকদের সম্মানজনক জীবনের নিশ্চয়তা দেব।”
তিনি বলেন, “বাগান মালিকরা চান না শ্রমিকরা শিক্ষিত হোক। তারা মনে করেন, শিক্ষিত হলে শ্রমিক পাওয়া যাবে না। কিন্তু এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগ—প্রযুক্তি ব্যবহারে শ্রমিকও উপকৃত হবে, উৎপাদনও বাড়বে।”
নারী শ্রমিকদের দুঃসহ বাস্তবতা, চা বাগানে নারী শ্রমিকদের কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরে জামায়াত আমির বলেন, “নারী শ্রমিকরা সন্তানকে পিঠে বেঁধে চাপাতা তুলছে—এটা অমানবিক। নামমাত্র বেতনে তারা শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেন তাদের এভাবে অবহেলা করা হচ্ছে?”
তিনি বলেন, “একজন সাধারণ নাগরিকের মতো চা শ্রমিকদের সন্তানদেরও শিক্ষিত করে তোলা জরুরি। তবেই তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, সমাজে অবদান রাখতে পারবে।”
ধর্মনিরপেক্ষ উন্নয়ন চিন্তার পক্ষে অবস্থান, ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিভেদ থাকবে না। সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন: জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, পল্টন জামায়াত নেতা শাহিন আহমদ খান, কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল মোন্তাজিম, সাবেক আমির মাস্টার আব্দুল হামিদ খান, খন্দকার আব্দুস ছোবহান, জয়চন্ডি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিলন বৈদ্য, চা শ্রমিক ইউনিয়ন লংলা ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু গোস্বামীসহ স্থানীয় পঞ্চায়েত ও নারী-পুরুষ শ্রমিকরা।
এর আগে ডা. শফিকুর রহমান কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে মহিলা সুধী সমাবেশ এবং মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।