প্রতিনিধি ২০ এপ্রিল ২০২৫ , ৭:০৪:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ
জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে গণহত্যার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ রোববার তার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। প্রতিবেদন দাখিলের পর জানা যাবে তার বিষয়ে তদন্ত শেষ নাকি আরও সময় প্রয়োজন।
এর আগে, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মো. মিজানুর রহমান। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর। আদালতে আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
এ বিষয়ে ওইদিন শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। ২০ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এসব মামলায় গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান।
গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ একশর বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
অন্যরা হলেন, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, সাবেক বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন।