• সারাদেশ

    লোহাগড়ায় মামলা তুলে না নেওয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট

      প্রতিনিধি ২৩ এপ্রিল ২০২৫ , ১০:১৮:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    লোহাগড়ায় মামলা তুলে না নেওয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট
    লোহাগড়ায় মামলা তুলে না নেওয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট

    আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন

    লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের মধ্যপাড়ায় পূর্বের একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা প্রত্যাহার না করায় প্রতিপক্ষের নেতৃত্বে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দুই শতাধিক লোকের একটি সংঘবদ্ধ দল এই হামলা চালায়। তারা প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

     

    প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখ রবুল ওরফে রবুল খেচি, মশি মোল্লা, ওহিদুর শেখ, মহিউদ্দিন শেখ ওরফে মহিউদ্দিন দত্ত, মানিক দত্ত, ফিরোজ মিরে, মুশা মিরে, নাছির সরদার, নিজাম মিরে এবং মাসুদ কাজীর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা, মারধর ও দাঙ্গাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে কথিত গ্রাম্য কোর্টের নামে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি, হুমকি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে জিম্মি করে রেখেছে।

     

    জানা গেছে, হামলাকারীরা পূর্বের মামলাগুলো তুলে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা না তোলায় মঙ্গলবার পরিকল্পিতভাবে প্রায় ৪০-৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এর আগেও তারা লাবু শেখের বাড়িতে হামলা চালায়, ঈদুল ফিতরের দিন শহিদুল লস্কর ও তার ছেলে শাহীন লস্করের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে।

     

    বিশেষ করে প্রবাসফেরত রেমিট্যান্স যোদ্ধা শাহীন লস্করের ওপর হামলাটি ছিল নৃশংস। তার শরীরের এমন কোনো অংশ নেই যেখানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়নি। অথচ আগেই গ্রাম্য কোর্ট তাকে মামলা না করার পরামর্শ দিয়ে দায়সারা করে। পরে তার বাবা আহিদুল লস্করকেও ঈদের দিন মারধর করা হয়। এ ঘটনায় প্রিন্স খান, হাসমত লস্করসহ আরও কয়েকজন রেমিট্যান্স যোদ্ধাও আক্রান্ত হন।

     

    ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকারদের মধ্যে রয়েছেন—মাকসুদ শেখ ওরফে কেসমত (পিতা: মকিদ শেখ), শামীম শেখ (পিতা: মৃত আজিজার রহমান শেখ), হুমায়ুন শেখ (পিতা: মৃত হাবিবুর রহমান শেখ), ইরান শেখ (পিতা: মৃত মুরাদ শেখ), পটু শেখ (পিতা: মৃত নজিবর রহমান শেখ), শাহীন লস্কর (পিতা: আহিদুল লস্কর), প্রিন্স খান (পিতা: ইকবাল খান), আকিকুল শেখ (পিতা: মৃত খোকন শেখ) সহ অর্ধশতাধিক পরিবার।

     

    গ্রামের সাধারণ মানুষের অভিযোগ, হামলাকারীরা স্থানীয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো তার ব্যতিক্রম নয়। এই বাহিনীর দৌরাত্ম্যে গ্রামের একটি পক্ষ গত দুই বছর ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। ঘেরের মাছ পর্যন্ত লুটপাট করে অনেক পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে।

    ভুক্তভোগীরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে এই সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এলাকাবাসী শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারেন।

    এ বিষয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশের দিঘলিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার এসআই তারক বিশ্বাস জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে স্থানীয় মেম্বার মানিক মিয়ার সাথে কথা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।”

    আরও খবর

    Sponsered content